সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। বিভিন্ন ধরণের চাঞ্চল্যকর অপরাধের স¦রূপ উদ্ঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আনার কারনেই এই প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছে আস্থা ও নিরাপত্তার অন্য নাম হিসাবে গ্রহণ যোগ্যতা পেয়েছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অপরাধীরা নিত্য নতুন অপরাধ করছে তার মধ্যে প্রতারণা অন্যতম। বিভিন্ন প্রতারক চক্র নানা কৌশলে সাধারন মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজিকরে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ও সম্পত্তি। প্রতারক চক্র তাদের উদ্দেশ্য সফল ও মানুষের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জনের জন্য বহুরূপী সাজে নিজেকে সাজিয়ে উপস্থাপন করে মানুষের সামনে। ইতিপূর্বে ভূয়া মেজর, ভূয়া ক্যাপ্টেন, ভূয়া ডিবি, এবং পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার নাম ও পদবী ব্যবহার করে প্রতারণার জন্য বিভিন্ন প্রতারককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ নানা জায়গায় চাকুরী দেয়ার জন্য একদিকে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয় এবং অন্যদিকে চাকুরী নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন সরকারী অফিস এবং সরকারী কর্মকর্তার পদমর্যাদা ব্যবহার করে এমনভাবে সুপারিশ করে, তা জুনিয়র কিংবা অধঃস্তন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পক্ষে সে সুপারিশ মূল্যায়ন না করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়। অনেক সময় নি¤œ বা মধ্যম পর্যায়ের পদবী যাদের কাছে সুপারিশ করা হয় তাদের ঐ অফিসে কিংবা পদবী নামের সত্যতা যাচাই করার মত সময় কিংবা সুযোগ থাকে না।
২। র্যাবের কাছে বেশ কিছু জায়গা থেকে এই ধরনের প্রতারণার কিছু তথ্য আসার পর র্যাব-২ এর একটি দল বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল ৩০ জুলাই ২০১৯খ্রিঃ আনুমানিক ১৩.৩০ ঘটিকার সময় ঢাকা মহানগরীর মিরপুর থানাধীন জনতা হাউজিং-এর সামনে পাকা রাস্তার উপর হইতে ভূয়া সহকারী পরিচালক পরিচয়দানকারী চক্রের অন্যতম হোতা মোঃ আমিনুল ইসলাম @ নাজমুল হাসান বিজয় (৩৭), পিতা- মৃত-হাসান ইমাম, মাতা- পারভীন নাহার, সাং- তেরখাদা, থানা- তেরখাদা, জেলা- খুলনা, বর্তমানে- জনতা হাউজিং, থানা- মিরপুর, ডিএমপি, ঢাকা আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃত আসামী একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের সদস্য। তারা কথিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভূয়া সহকারী পরিচালক পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজনের নিকট হইতে বিভিন্ন সরকারী চাকুরী দেয়ার নামে প্রার্থীদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত এবং পরবর্তীতে তাদেরকে চাকুরী না দিয়ে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে আসছিল। ধৃত আসামীদের’কে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
৩। মোঃ আমিনুল ইসলাম @ নাজমুল হাসান বিজয় (৩৭) এই চক্রের প্রধান হোতা, সে এই চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করতো। সে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ের একজন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিত। সাধারন ছাত্র, বেকার যুবক, দরিদ্র ছাত্রদের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে সরকারী চাকুরী দেওয়ার কথাবলে ঢাকায় নিয়ে আসত। অবশেষে সে তার চক্রের সহায়তায় চাকুরি প্রত্যাশীদের বিভিন্ন ভূয়া প্রতিশ্রুতি প্রদান করত এবং এতে তারা আশ^স্ত হয়ে বিপুল পরিমান টাকা এই ভূয়া কর্মকর্তাকে প্রদান করত। উক্ত ভূয়া কর্মকর্তার নামে কাফরুল থানায় ১৩,৩০,০০০/- টাকা, চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নেওয়ার জন্য একটি প্রতরণা মামলা রয়েছে মামলা নম্বর ৪৪ তারিখ-৩০/০৭/২০১৯ ইং ধারা-৪০৬/৪২০। উক্ত মামলার পরিপেক্ষিতে ভূয়া কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে কাফরুল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
৪। এই চক্রের সাথে আরো ৩/৪ জন সদস্য জড়িত আছে মর্মে জানা যায়।
৫। ধৃত আসামীদের’কে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতেও র্যাব-২ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে। উপরোক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
-বিজ্ঞপ্তি